বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরামের দুর্নীতির অভিযোগ
ডেস্ক রিপোর্ট
২৮-১২-২০২৪ দুপুর ৪:৩
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরামের দুর্নীতির অভিযোগ
বর্তমান সরকারকে অকার্যকর করার নীল নকশা বাস্তবায়নে রূপালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে স্বৈরাচারী হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট কর্মকর্তা বিবেচনায় পদোন্নতি পাওয়া কৃষি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) খান ইকবাল হোসেন এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের অত্যন্ত ঘনিষ্ট বন্ধু ও বারংবার দূর্নীতির অভিযোগে গণমাধ্যমের শিরোনাম হওয়া বিকেবির প্রশাসন মহাবিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোহাঃ খালেদুজ্জামান- এই দুই কর্মকর্তার নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী, সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে একটি ফেসিস্ট সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকে কর্মরত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতা কর্মী ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তাদের অবস্থান সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, স্বৈরাচার সরকার পতনের পর এই সিন্ডিকেট কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে ও সুকৌশলে জাতীয়তাবাদী আদর্শকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরাম নামক অস্থিত্ববিহীন সংগঠন এর প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী মো: জাহিদ হোসেনকে ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। বর্তমান সরকার এবং বিশেষভাবে জাতীয়তাবাদী আদর্শকে হেয় করতে এই সিন্ডিকেট কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরামের অন্যতম অংশীদার হিসাবে বিকেবি এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নামধারী যথাক্রমে ফয়েজ আহমেদ ও মিরাজ হোসেনের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে বদলী ও পদোন্নতি বাণিজ্য শুরু করা হয়েছে এবং বিষয়টি জাতীয়তাবাদী ফোরামের দুর্নীতি হিসাবে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ায় ব্যাংকের জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তাগণ এই বিষয়ে আলাপ করতে গেলে মো: জাহিদ হোসেন রীতিমত দুর্ব্যবহার করেন এবং ৯৫ শতাংশ আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে তিনি ৫ শতাংশ জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তা নিয়ে চলতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। এহেন পরিস্থিতিতে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরগণ বহাল তবিয়তে ও নিশ্চিন্তে সুবিধাজনক কর্মস্থলে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও বিএনপির বিরুদ্ধে অপ্রচার করে চলেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই ফেসিস্ট সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় সিবিএ নামধারী কতিপয় অবসরভোগী কর্মচারী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সমন্বয়ে ক্যাডার বাহিনি সময়ে অসময়ে অকারণে সাধারণ কর্মকর্তাদের মারধর করে ও হুমকী ধামকী দিয়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়কে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। ব্যাংকের অফিসার কল্যাণ সমিতির নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু করায় জড়িত কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতাকর্মী ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণকে পেশাজীবী সংগঠন হিসাবে জিয়া পরিষদ গঠনের কার্যক্রমে জড়িত থাকায় হাত-পা ভেঙ্গে ফেলা, পঙ্গু করে দেয়াসহ হত্যার হুমকী দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে গত ১৮ ডেসেম্বর ২০২৪ তারিখ কার্যদিবস শেষে রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টা হতে সাড়ে ৮ টার মধ্যে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের দশম তলায় এই সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনি ব্যাংকের সাবেক কর্মচারী বিএনপিপন্থি সিবিএ'র নেতা আব্দুল হালিম (৬৩) কে মারধর করে হত্যা করে মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে মর্মে মৃত্যুসনদ প্রদান করেন। এই ঘটনায় ফয়েজ ও মিরাজ হোসেনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামী করে মতিঝিল থানায় হত্যা মামলা হয়েছে এবং এই হত্যাকান্ডে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরামের সর্বোচ্চ নেতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ থাকার সন্দেহে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থার তাকে বিশেষ নজরদারিতে রেখেছেন বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য বিএনপিপন্থি সিবিএ'র নেতা আব্দুল হালিম বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন এবং তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরামের কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতাকর্মী ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ ব্যাংক ভবনের অভ্যন্তরে আদর্শিক সহযোদ্ধার হত্যাকান্ডের বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব পাশসহ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানাতে গেলে চাকুরীবিধির দোহায় দিয়ে ফেসিস্ট সিন্ডিকেটের নির্দেশনা মোতাবেক মো. জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে সকল পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতাকর্মী ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তাগণের পক্ষ থেকে বিএনপিপন্থি সিবিএ'র নেতা ও বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি, এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
কে এই মো. জাহিদ হোসেন ?
মো. জাহিদ হোসেন ২০০১ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করেন এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী হিসাবে অধিকাংশ সময়ে প্রধান কার্যালয় অথবা সুবিধাজনক কর্মস্থলে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১০ সালে মুখ্য কর্মকর্তা হিসাবে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (তৎকালীন পারসোনাল ডিপার্টমেন্ট) এ বদলী হয়ে আসেন এবং ২০১৪ সালে পরবর্তি পদোন্নতি পেয়ে উর্ধতন মুখ্য কর্মকর্তা হিসাবে একই বিভাগে কর্মরত থাকেন। এসময় ব্যাংকের ড্রাইভার নিয়োগে তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি প্রমাণীত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাকে প্রশাসনিক কারণে দূরবর্তী শাখায় শাস্তিমূলক বদলি করেন। পরবর্তিতে ২০১৭ সালে পুর্ব পদে বিধি মোতাবেক তিন বছর সময়কাল পূর্ণ হবার পূর্বেই ব্যাংকের পদোন্নতি নীতিমালা লংঘন করে আওয়ামীপন্থি ব্যাচ হিসাবে প্রভাব খাটিয়ে মন্ত্রনালয় হতে খুনী হাসিনা দুর্নীতিবাজ আমলাদের অবৈধ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে অবৈধ অনুমোদন সংগ্রহপূর্বক সহকারী মহাব্যবস্থাপক এবং একইভাবে ২০২০ সালে পূর্ব পদে বিধি মোতাবেক তিন বছর সময়কাল পূর্ণ হবার পূর্বেই উপমহাব্যবস্থাপক হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন। সহকারী মহাব্যবস্থাপক অবস্থায় মাদারীপুর অঞ্চলের মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, দুর্নীতি এবং এক নারীকে কে নিয়ে বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগ উঠলে কর্তৃপক্ষ তাকে মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব হতে অব্যহতি প্রদান করে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ে বদলী করেন৷ উপমহাব্যবস্থাপক অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালনকালে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক এর নির্দেশনা মোতাবেক তাকে মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব হতে অব্যহতি প্রদান করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপককে শাস্তিমূলকভাবে সিলেট বিভাগে বদলী করা হয়। উল্লেখ্য তিনি ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্ব নেয়ার পর ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে শাস্তিমূলকভাবে বদলীকৃত কর্মকর্তাকে স্টাফ কলেজে বদলী করেছেন। ৫ আগস্টের পর রাতারাতি ভোলপাল্টে জাতীয়তাবাদী আদর্শের নাম ব্যবহার করে ফেসিস্ট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মকর্তা/কর্মচারীর বদলীর নামে বানিজ্য করে এবং ব্যাংকের পদোন্নতির নীতিমালা লংঘনপূর্বক অর্থের বিনিময়ে পদোন্নতি প্রদান করে মো: জাহিদ হোসেন গত সাড়ে চার মাসে নূনতম প্রায় দুই কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।
মো. হাবিবুন নবী, পদন্নোতি ও বদলী বানিজ্য সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য.
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ফেসিস্ট সিন্ডিকেটের অন্যতম মাষ্টার মাইন্ড হিসাবে কাজ করছেন পর্ষদ সচিবালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মোঃ হাবিবুন নবী। তিনি আপাদমস্তক একজন দূর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি। গাজীপুর জিলার মির্জাপুর এবং শ্রীপুর শাখার ব্যবস্থাপক থাককালীন সময়ে এলাকার লোকজনের নিকট তিনি ঘুষ দুর্নীতির কারিগর হিসাবে পরিচিত ছিলেন। টাংগাইল (দঃ) এ মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন কালে একটি শাখতেই ৩০ (ত্রিশ) কোটি টাকার অনিয়মের প্রমানিত অজিযোগ রয়েছে। উক্ত অভিযোগ হতে তার ব্যাচমেট দ্বারা তদন্ত করিয়ে এবং তৎকালীন তার এলাকার দুর্নীতিপগ্রস্ত-বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহযোগীতায় আওয়ামী প্রভাব বিস্তার করে তিনি নিজে বেরিয়ে আসিলেও সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপক সহ ৪ (চার) কর্মকর্তা এখনও সাময়িক বরখাস্ত আছে। কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মাঝে জনশ্রুতি আছে ওই ৪(চার) জন কর্মকর্তা কে তার প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার জন্য বিপুল পরিমান অর্থের লেনদেন হয়েছে। উল্লেখ্য উক্ত উপমহাব্যবস্থাপক শুধুমাত্র এই চাকরি করে টাংগাইল, গাজীপুর, ঢাকার বসুন্ধরা, মিরপুর ইসিবি চত্বরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক দামী ফ্ল্যাট এবং সম্পদের মালিক হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি জাপান থেকে ব্রান্ড নিউ টয়োটা ব্রান্ডের একটি গাড়িও আমদানী করেছেন। চলমান জিএম হিসাবে পদোন্নতি ভাইভায় অংশগ্রহণ করে পদ নিশ্চিত করার জন্য সম্প্রতি FID হতে বদলীকৃত একজন যুগ্মসচিব কে ঢাকার বৌদ্ধমন্দির এলাকায় নগদে ২৫ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়।
ডেস্ক রিপোর্ট
২৮-১২-২০২৪ দুপুর ৪:৩
বর্তমান সরকারকে অকার্যকর করার নীল নকশা বাস্তবায়নে রূপালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে স্বৈরাচারী হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট কর্মকর্তা বিবেচনায় পদোন্নতি পাওয়া কৃষি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) খান ইকবাল হোসেন এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের অত্যন্ত ঘনিষ্ট বন্ধু ও বারংবার দূর্নীতির অভিযোগে গণমাধ্যমের শিরোনাম হওয়া বিকেবির প্রশাসন মহাবিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোহাঃ খালেদুজ্জামান- এই দুই কর্মকর্তার নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী, সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে একটি ফেসিস্ট সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকে কর্মরত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতা কর্মী ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তাদের অবস্থান সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, স্বৈরাচার সরকার পতনের পর এই সিন্ডিকেট কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে ও সুকৌশলে জাতীয়তাবাদী আদর্শকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরাম নামক অস্থিত্ববিহীন সংগঠন এর প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী মো: জাহিদ হোসেনকে ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। বর্তমান সরকার এবং বিশেষভাবে জাতীয়তাবাদী আদর্শকে হেয় করতে এই সিন্ডিকেট কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরামের অন্যতম অংশীদার হিসাবে বিকেবি এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নামধারী যথাক্রমে ফয়েজ আহমেদ ও মিরাজ হোসেনের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে বদলী ও পদোন্নতি বাণিজ্য শুরু করা হয়েছে এবং বিষয়টি জাতীয়তাবাদী ফোরামের দুর্নীতি হিসাবে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ায় ব্যাংকের জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তাগণ এই বিষয়ে আলাপ করতে গেলে মো: জাহিদ হোসেন রীতিমত দুর্ব্যবহার করেন এবং ৯৫ শতাংশ আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে তিনি ৫ শতাংশ জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তা নিয়ে চলতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। এহেন পরিস্থিতিতে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরগণ বহাল তবিয়তে ও নিশ্চিন্তে সুবিধাজনক কর্মস্থলে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও বিএনপির বিরুদ্ধে অপ্রচার করে চলেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই ফেসিস্ট সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় সিবিএ নামধারী কতিপয় অবসরভোগী কর্মচারী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সমন্বয়ে ক্যাডার বাহিনি সময়ে অসময়ে অকারণে সাধারণ কর্মকর্তাদের মারধর করে ও হুমকী ধামকী দিয়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়কে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। ব্যাংকের অফিসার কল্যাণ সমিতির নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু করায় জড়িত কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতাকর্মী ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণকে পেশাজীবী সংগঠন হিসাবে জিয়া পরিষদ গঠনের কার্যক্রমে জড়িত থাকায় হাত-পা ভেঙ্গে ফেলা, পঙ্গু করে দেয়াসহ হত্যার হুমকী দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে গত ১৮ ডেসেম্বর ২০২৪ তারিখ কার্যদিবস শেষে রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টা হতে সাড়ে ৮ টার মধ্যে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের দশম তলায় এই সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনি ব্যাংকের সাবেক কর্মচারী বিএনপিপন্থি সিবিএ'র নেতা আব্দুল হালিম (৬৩) কে মারধর করে হত্যা করে মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে মর্মে মৃত্যুসনদ প্রদান করেন। এই ঘটনায় ফয়েজ ও মিরাজ হোসেনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামী করে মতিঝিল থানায় হত্যা মামলা হয়েছে এবং এই হত্যাকান্ডে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরামের সর্বোচ্চ নেতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ থাকার সন্দেহে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থার তাকে বিশেষ নজরদারিতে রেখেছেন বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য বিএনপিপন্থি সিবিএ'র নেতা আব্দুল হালিম বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন এবং তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরামের কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতাকর্মী ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ ব্যাংক ভবনের অভ্যন্তরে আদর্শিক সহযোদ্ধার হত্যাকান্ডের বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব পাশসহ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানাতে গেলে চাকুরীবিধির দোহায় দিয়ে ফেসিস্ট সিন্ডিকেটের নির্দেশনা মোতাবেক মো. জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে সকল পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতাকর্মী ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তাগণের পক্ষ থেকে বিএনপিপন্থি সিবিএ'র নেতা ও বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি, এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
কে এই মো. জাহিদ হোসেন ?
মো. জাহিদ হোসেন ২০০১ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করেন এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী হিসাবে অধিকাংশ সময়ে প্রধান কার্যালয় অথবা সুবিধাজনক কর্মস্থলে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১০ সালে মুখ্য কর্মকর্তা হিসাবে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (তৎকালীন পারসোনাল ডিপার্টমেন্ট) এ বদলী হয়ে আসেন এবং ২০১৪ সালে পরবর্তি পদোন্নতি পেয়ে উর্ধতন মুখ্য কর্মকর্তা হিসাবে একই বিভাগে কর্মরত থাকেন। এসময় ব্যাংকের ড্রাইভার নিয়োগে তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি প্রমাণীত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাকে প্রশাসনিক কারণে দূরবর্তী শাখায় শাস্তিমূলক বদলি করেন। পরবর্তিতে ২০১৭ সালে পুর্ব পদে বিধি মোতাবেক তিন বছর সময়কাল পূর্ণ হবার পূর্বেই ব্যাংকের পদোন্নতি নীতিমালা লংঘন করে আওয়ামীপন্থি ব্যাচ হিসাবে প্রভাব খাটিয়ে মন্ত্রনালয় হতে খুনী হাসিনা দুর্নীতিবাজ আমলাদের অবৈধ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে অবৈধ অনুমোদন সংগ্রহপূর্বক সহকারী মহাব্যবস্থাপক এবং একইভাবে ২০২০ সালে পূর্ব পদে বিধি মোতাবেক তিন বছর সময়কাল পূর্ণ হবার পূর্বেই উপমহাব্যবস্থাপক হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন। সহকারী মহাব্যবস্থাপক অবস্থায় মাদারীপুর অঞ্চলের মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, দুর্নীতি এবং এক নারীকে কে নিয়ে বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগ উঠলে কর্তৃপক্ষ তাকে মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব হতে অব্যহতি প্রদান করে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ে বদলী করেন৷ উপমহাব্যবস্থাপক অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালনকালে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক এর নির্দেশনা মোতাবেক তাকে মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব হতে অব্যহতি প্রদান করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপককে শাস্তিমূলকভাবে সিলেট বিভাগে বদলী করা হয়। উল্লেখ্য তিনি ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্ব নেয়ার পর ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে শাস্তিমূলকভাবে বদলীকৃত কর্মকর্তাকে স্টাফ কলেজে বদলী করেছেন। ৫ আগস্টের পর রাতারাতি ভোলপাল্টে জাতীয়তাবাদী আদর্শের নাম ব্যবহার করে ফেসিস্ট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মকর্তা/কর্মচারীর বদলীর নামে বানিজ্য করে এবং ব্যাংকের পদোন্নতির নীতিমালা লংঘনপূর্বক অর্থের বিনিময়ে পদোন্নতি প্রদান করে মো: জাহিদ হোসেন গত সাড়ে চার মাসে নূনতম প্রায় দুই কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।
মো. হাবিবুন নবী, পদন্নোতি ও বদলী বানিজ্য সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য.
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ফেসিস্ট সিন্ডিকেটের অন্যতম মাষ্টার মাইন্ড হিসাবে কাজ করছেন পর্ষদ সচিবালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মোঃ হাবিবুন নবী। তিনি আপাদমস্তক একজন দূর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি। গাজীপুর জিলার মির্জাপুর এবং শ্রীপুর শাখার ব্যবস্থাপক থাককালীন সময়ে এলাকার লোকজনের নিকট তিনি ঘুষ দুর্নীতির কারিগর হিসাবে পরিচিত ছিলেন। টাংগাইল (দঃ) এ মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন কালে একটি শাখতেই ৩০ (ত্রিশ) কোটি টাকার অনিয়মের প্রমানিত অজিযোগ রয়েছে। উক্ত অভিযোগ হতে তার ব্যাচমেট দ্বারা তদন্ত করিয়ে এবং তৎকালীন তার এলাকার দুর্নীতিপগ্রস্ত-বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহযোগীতায় আওয়ামী প্রভাব বিস্তার করে তিনি নিজে বেরিয়ে আসিলেও সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপক সহ ৪ (চার) কর্মকর্তা এখনও সাময়িক বরখাস্ত আছে। কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মাঝে জনশ্রুতি আছে ওই ৪(চার) জন কর্মকর্তা কে তার প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার জন্য বিপুল পরিমান অর্থের লেনদেন হয়েছে। উল্লেখ্য উক্ত উপমহাব্যবস্থাপক শুধুমাত্র এই চাকরি করে টাংগাইল, গাজীপুর, ঢাকার বসুন্ধরা, মিরপুর ইসিবি চত্বরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক দামী ফ্ল্যাট এবং সম্পদের মালিক হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি জাপান থেকে ব্রান্ড নিউ টয়োটা ব্রান্ডের একটি গাড়িও আমদানী করেছেন। চলমান জিএম হিসাবে পদোন্নতি ভাইভায় অংশগ্রহণ করে পদ নিশ্চিত করার জন্য সম্প্রতি FID হতে বদলীকৃত একজন যুগ্মসচিব কে ঢাকার বৌদ্ধমন্দির এলাকায় নগদে ২৫ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়।