বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে কৃষি ব্যাংকের দশম গ্রেডের কর্মকর্তাবৃন্দ"
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫-৯-২০২৪ বিকাল ৬:৫২
বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে কৃষি ব্যাংকের দশম গ্রেডের কর্মকর্তাবৃন্দ"
বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে কৃষি ব্যাংকের দশম গ্রেডের কর্মকর্তাবৃন্দ। বাংলাদেশের কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বৃহত্তম এই বিশেষায়িত ব্যাংকেটিকে দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদ পাকড়াও করে রেখেছে।
এই ব্যাংকের মোট ১০০২৭ জন জনবলের মধ্যে ৫২৭২ জন শুধু দশম গ্রেডের কর্মকর্তা। এই সিংহভাগ জনবলই ব্যাংকের প্রাণ। ঋণ আদায়, বিতরণ, আমানত সংগ্রহ, কিংবা প্রাত্যহিক গ্রাহক সেবা এসবের দুই-তৃতীয়াংশ কাজই এই গ্রেডের কর্মকর্তারা করে থাকেন। নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার মধ্যেও তাই প্রতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত সকল লক্ষ্যমাত্রা সন্তোষজনকভাবে অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। অথচ এই গ্রেডের জনবলই সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার।
জানা যায়, ব্যাংকের বিদ্যমান পদোন্নতি ব্যবস্থা বৈষম্যপূর্ণ। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ৩(তিন) বছরের মাথায় মুখ্য কর্মকর্তা হচ্ছেন। একইভাবে মুখ্য কর্মকর্তা থেকে ঊর্ধ্বতন মুখ্য কর্মকর্তা, কিংবা উর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা থেকে সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক প্রতি ধাপেই ৩ বছরান্তে পদোন্নতি পাচ্ছে। অথচ প্রবিধানমালা, ২০০৮ এ কর্মকর্তাদের জন্য একই কথা লেখা থাকলেও ভয়াবহ বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তারা। তারা ৩ বছর তো দূরের কথা পদোন্নতি পাচ্ছে না ৭-৮ বছরেও। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির একই সার্কুলারে নিয়োগপ্রাপ্ত অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা (১০ম গ্রেড) ৩/৪ বছরের ভিতরেই প্রমোশন পাচ্ছেন।
ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালের পরে তাদের নিজেদের স্বার্থে আর কোন অর্গানোগ্রাম পাশ করায় নি। ২০২০ সালের অর্গানোগ্রাম প্রস্তাবিত থাকলেও এখনো তা বাস্তবায়নের আলো দেখেনি। ফলে পদোন্নতি না পেয়ে দিনদিন ১০ম গ্রেডে কর্মকর্তাদের জট ভয়াবহ হচ্ছে।
রাষ্ট্রের ঘাড থেকে ফ্যাসিবাদের ভয়াল থাবা ছাত্রজনতার বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে উৎখাত করে বৈষম্যহীন দেশ গঠনের কার্যক্রম চললেও, ভয়াবহ বৈষম্য দাড়িয়ে আছে কৃষি ব্যাংকে। তাই এই চলমান বৈষম্য দূরীকরণে কর্মকর্তারা (১০ম গ্রেড) একত্রিত হচ্ছেন দেশজুড়ে।
অন্য সকল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক যেখানে পঞ্চম গ্রেড থেকে চতুর্থ গ্রেডে প্রমোশনে ভাইভা দিতে হয়, সেখানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ভাইভা শুরু করে দশম গ্রেড থেকে। এ ভাইভাতে কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তাদের থেকে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রতিবছর কোটি টাকা লোপাট করত, আর বিগত কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মকর্তা দূর্নীতি করে জ্যেষ্ঠতার তালিকা লংঘন করেও পদোন্নতি দেওয়ার উদাহরণ তৈরি করেছে। ভাইভাতে বিগত কর্তৃপক্ষ অনেক গুলি সেশন আয়োজন করে প্রতিদিন নিজেদের পকেটে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছিল, আবার কর্মকর্তারা ভাইভা দিতে এসে টিএ ডিএ বিল করে ব্যাংকের কোটি টাকা লস করেছে।
এ ব্যাংক কর্মকর্তাদের অসন্তোষ অনেক আগে থেকেই জন্ম নিয়েছে। অতএব বর্তমান কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপির মাধ্যমে জানানোর পরেও কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দিলেও কালোৎক্ষেপন হওয়ার কারণে বর্তমানে কর্মকর্তারা আশাহত হচ্ছে।
তাই কর্মকর্তারা মনে করছেন বৈষম্য দূরীভূত না হওয়া পর্যন্ত তারা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবেন বলে জানিয়েছেন।এর পরিপ্রেক্ষিতে এমডি মহোদয় গত শনিবার বিকেলে এসে আন্দোলনকারী অফিসারদের সামনে এসে ঘোষণা দেন যে, এ বছর থেকে ১০ম গ্রেড থেকে চতুর্থ গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতিতে কোনো ধরনের ভাইভা থাকবেনা। পারফর্মেন্স ও জ্যোষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি নিশ্চিত করা হবে, সেই সাথে পর পর ৩ টি পূর্নাঙ্গ এসিআর (বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন) যাদের আছে তাদের সবাইকে ডিসেম্বর ভিত্তিক সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে প্রমোশন দেয়া হবে। পরবর্তী পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। আন্দোলনকারীরা এমডি স্যারের প্রতিশ্রুতিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং এর ব্যত্যয় ঘটলে পুনরায় তারা বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিবেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫-৯-২০২৪ বিকাল ৬:৫২
বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে কৃষি ব্যাংকের দশম গ্রেডের কর্মকর্তাবৃন্দ। বাংলাদেশের কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বৃহত্তম এই বিশেষায়িত ব্যাংকেটিকে দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদ পাকড়াও করে রেখেছে।
এই ব্যাংকের মোট ১০০২৭ জন জনবলের মধ্যে ৫২৭২ জন শুধু দশম গ্রেডের কর্মকর্তা। এই সিংহভাগ জনবলই ব্যাংকের প্রাণ। ঋণ আদায়, বিতরণ, আমানত সংগ্রহ, কিংবা প্রাত্যহিক গ্রাহক সেবা এসবের দুই-তৃতীয়াংশ কাজই এই গ্রেডের কর্মকর্তারা করে থাকেন। নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার মধ্যেও তাই প্রতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত সকল লক্ষ্যমাত্রা সন্তোষজনকভাবে অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। অথচ এই গ্রেডের জনবলই সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার।
জানা যায়, ব্যাংকের বিদ্যমান পদোন্নতি ব্যবস্থা বৈষম্যপূর্ণ। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ৩(তিন) বছরের মাথায় মুখ্য কর্মকর্তা হচ্ছেন। একইভাবে মুখ্য কর্মকর্তা থেকে ঊর্ধ্বতন মুখ্য কর্মকর্তা, কিংবা উর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা থেকে সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক প্রতি ধাপেই ৩ বছরান্তে পদোন্নতি পাচ্ছে। অথচ প্রবিধানমালা, ২০০৮ এ কর্মকর্তাদের জন্য একই কথা লেখা থাকলেও ভয়াবহ বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তারা। তারা ৩ বছর তো দূরের কথা পদোন্নতি পাচ্ছে না ৭-৮ বছরেও। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির একই সার্কুলারে নিয়োগপ্রাপ্ত অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা (১০ম গ্রেড) ৩/৪ বছরের ভিতরেই প্রমোশন পাচ্ছেন।
ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালের পরে তাদের নিজেদের স্বার্থে আর কোন অর্গানোগ্রাম পাশ করায় নি। ২০২০ সালের অর্গানোগ্রাম প্রস্তাবিত থাকলেও এখনো তা বাস্তবায়নের আলো দেখেনি। ফলে পদোন্নতি না পেয়ে দিনদিন ১০ম গ্রেডে কর্মকর্তাদের জট ভয়াবহ হচ্ছে।
রাষ্ট্রের ঘাড থেকে ফ্যাসিবাদের ভয়াল থাবা ছাত্রজনতার বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে উৎখাত করে বৈষম্যহীন দেশ গঠনের কার্যক্রম চললেও, ভয়াবহ বৈষম্য দাড়িয়ে আছে কৃষি ব্যাংকে। তাই এই চলমান বৈষম্য দূরীকরণে কর্মকর্তারা (১০ম গ্রেড) একত্রিত হচ্ছেন দেশজুড়ে।
অন্য সকল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক যেখানে পঞ্চম গ্রেড থেকে চতুর্থ গ্রেডে প্রমোশনে ভাইভা দিতে হয়, সেখানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ভাইভা শুরু করে দশম গ্রেড থেকে। এ ভাইভাতে কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তাদের থেকে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রতিবছর কোটি টাকা লোপাট করত, আর বিগত কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মকর্তা দূর্নীতি করে জ্যেষ্ঠতার তালিকা লংঘন করেও পদোন্নতি দেওয়ার উদাহরণ তৈরি করেছে। ভাইভাতে বিগত কর্তৃপক্ষ অনেক গুলি সেশন আয়োজন করে প্রতিদিন নিজেদের পকেটে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছিল, আবার কর্মকর্তারা ভাইভা দিতে এসে টিএ ডিএ বিল করে ব্যাংকের কোটি টাকা লস করেছে।
এ ব্যাংক কর্মকর্তাদের অসন্তোষ অনেক আগে থেকেই জন্ম নিয়েছে। অতএব বর্তমান কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপির মাধ্যমে জানানোর পরেও কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দিলেও কালোৎক্ষেপন হওয়ার কারণে বর্তমানে কর্মকর্তারা আশাহত হচ্ছে।
তাই কর্মকর্তারা মনে করছেন বৈষম্য দূরীভূত না হওয়া পর্যন্ত তারা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবেন বলে জানিয়েছেন।এর পরিপ্রেক্ষিতে এমডি মহোদয় গত শনিবার বিকেলে এসে আন্দোলনকারী অফিসারদের সামনে এসে ঘোষণা দেন যে, এ বছর থেকে ১০ম গ্রেড থেকে চতুর্থ গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতিতে কোনো ধরনের ভাইভা থাকবেনা। পারফর্মেন্স ও জ্যোষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি নিশ্চিত করা হবে, সেই সাথে পর পর ৩ টি পূর্নাঙ্গ এসিআর (বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন) যাদের আছে তাদের সবাইকে ডিসেম্বর ভিত্তিক সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে প্রমোশন দেয়া হবে। পরবর্তী পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। আন্দোলনকারীরা এমডি স্যারের প্রতিশ্রুতিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং এর ব্যত্যয় ঘটলে পুনরায় তারা বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিবেন।