অটোরিকশার দৌরাত্ম্যে নগরবাসীর অতিষ্ঠ জীবন সিটি কর্পোরেশনের নতুন উদ্যোগ: চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা
শহিদুল ইসলাম খোকন
১৫-১০-২০২৫ রাত ৮:৩৯
অটোরিকশার দৌরাত্ম্যে নগরবাসীর অতিষ্ঠ জীবন সিটি কর্পোরেশনের নতুন উদ্যোগ: চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা
রাজধানী ঢাকা আজ যেন এক অনিয়ন্ত্রিত চাকার নগরী। সকাল থেকে গভীর রাত—রাস্তাজুড়ে ব্যাটারিচালিত অটো ও অটোরিকশার দৌড়ঝাঁপে নগরবাসীর জীবন হয়ে উঠেছে অতিষ্ঠ, অনিরাপদ ও দুর্বিষহ। একদিকে যানজট, অন্যদিকে প্রতিদিনের দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা—সব মিলিয়ে নগরের নাগরিক জীবন যেন রুদ্ধশ্বাস।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—এই বিশৃঙ্খলার দায় কার? কেন প্রশাসন নীরব? আর কেন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে এই অবৈধ যানবাহনের আধিপত্য?
প্রতিদিন প্রাণহানি, আহত অসংখ্য
চলতি মাসেই (অক্টোবর ২০২৫) রাজধানীতে অটো ও অটোরিকশার সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন, আহত হয়েছেন অগণিত। ট্রাফিক বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, রাজধানীর রাস্তায় প্রতিদিন প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক ব্যাটারিচালিত অটো ও ইজিবাইক চলছে—যার নেই কোনো বৈধ রেজিস্ট্রেশন বা অনুমোদন।
তবু এই অটোগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সড়ক ও মহাসড়কে—সিগন্যাল উপেক্ষা করে, উল্টোপথে ছুটে, মাঝরাস্তায় যাত্রী উঠানামা করছে।
মিরপুর, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, গাবতলী—যেখানেই যান, দৃশ্য এক: এক অনিয়ন্ত্রিত গতির শহর।
আইনরক্ষক ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা: ভয়ংকর নতুন প্রবণতা
সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো, অটোরিকশা চালকদের একাংশ এখন যেন আইনের ঊর্ধ্বে। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, ট্রাফিক সার্জেন্টরা অটো আটকাতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। এমনকি দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধুই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা নয়—বরং অটোরিকশা চালকদের নৈতিক অবক্ষয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক অধ্যাপক বলেন—যখন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও সংবাদকর্মীরা নিরাপদ থাকে না, তখন সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা তো কল্পনাই করা যায় না। এটি সামাজিক অরাজকতার প্রতিফলন।
অটোরিকশা সিন্ডিকেটের পেছনে কারা?
বহুদিন ধরেই অভিযোগ—অটোরিকশা ব্যবসার পেছনে রয়েছে একটি শক্তিশালী প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। চীন থেকে অটোরিকশার যন্ত্রাংশ আমদানি করে দেশের বিভিন্ন গ্যারেজে সংযোজন করে বিক্রি করা হচ্ছে—যার বড় অংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক ও অননুমোদিত।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উপসচিব (যানবাহন শাখা) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাছিম বলেন—আজ যত্রতত্র গড়ে ওঠা গ্যারেজ এবং চীন থেকে অবাধে আসা অটোরিকশার পার্টস নিয়ন্ত্রণ না করলে সমস্যার সমাধান হবে না। দেশের বড় বড় কয়েকটি গ্রুপসহ কিছু প্রতিষ্ঠান সরাসরি চীন থেকে পার্টস আমদানি করছে—এদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন—প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কারণে অনেক সময় উচ্ছেদ অভিযান ব্যর্থ হয়। কয়েকদিন পরই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। কিছু অসাধু ব্যক্তি তাদের পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করছেন না, যার ফলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সিটি কর্পোরেশনের নতুন উদ্যোগ: প্রশিক্ষণ ও নিবন্ধন
যদিও সমালোচনার মুখে, দুই সিটি কর্পোরেশন এখন অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
মো. নাছিম জানান—ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে আধুনিক অটোরিকশা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করেছে। ইতোমধ্যে ১৬ হাজার চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, পর্যায়ক্রমে ৮০ হাজার চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান—প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালকদের মাত্র ৫০ টাকায় লাইসেন্স প্রদান করা হচ্ছে, এবং শুধুমাত্র নিবন্ধিত সরকার অনুমোদিত আধুনিক অটোরিকশার জন্যই এই লাইসেন্স নিবন্ধন ব্যবস্থা প্রযোজ্য। অন্য কোনো অটোরিকশা, যদি সিটি কর্পোরেশন নিবন্ধনভুক্ত না হয়, সেটি রাস্তায় চলতে পারবে না।
আগামী ২৪ ও ২৫ অক্টোবর ২০২৫-এ নতুন প্রশিক্ষণ সেশন শুরু হবে, যেখানে ৩০০ মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণ দেবেন। তাদের মধ্যে ১০০ জন থাকবেন ট্রাফিক বিভাগ থেকে, বাকিরা অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে।
গ্যারেজ ও চার্জিং স্টেশন নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ:
মো. নাছিম বলেন—অটোরিকশা মালিক ও গ্যারেজ মালিকদের আমরা নির্দিষ্ট চার্জিং স্টেশন ও নিবন্ধন ব্যবস্থার আওতায় আনব। সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমোদন না থাকলে কোনো গ্যারেজ পরিচালনা করা যাবে না। তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে নীতিমালা সুপারিশ করবেন বলেও জানান।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নবিদ্ধ ঢাকা:
অটোরিকশা বিশৃঙ্খলা এখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচিত বিষয়। বিবিসি ও রয়টার্স-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানী ঢাকায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন বিস্তার নগরব্যবস্থাপনার অক্ষমতা প্রকাশ করছে।
বিশ্ব নগর পরিকল্পনাবিদদের একাংশের মতে—ঢাকার অটো-ইজিবাইক বিশৃঙ্খলা এখন নগর পরিকল্পনার ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে উঠছে।
সমাধানের প্রস্তাব: এখনই সময় ব্যবস্থা নেওয়ার
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আর বিলম্ব নয়। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে নগর বিপর্যয় অনিবার্য।
তাদের প্রস্তাবসমূহ হলো—
*জরুরি ভিত্তিতে অটোরিকশা নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা প্রণয়ন।
*সিটি কর্পোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশের যৌথ মাঠ পর্যবেক্ষণ।
*চালকদের বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ ও আচরণবিধি বাস্তবায়ন।
*অবৈধ গ্যারেজ ও চার্জিং স্টেশন শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ।
নাগরিক সচেতনতার আহ্বান:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উপসচিব (যানবাহন শাখা) মো. নাছিম নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন—
যাত্রীরা যেন নির্দিষ্ট স্থানে পার্ক করা অটোরিকশায় চড়েন এবং উল্টোপথে যেতে চালকদের বাধ্য না করেন। নাগরিক সচেতনতা ছাড়া কোনো আইনই সফল হবে না।
শেষ কথা:
অটো ও অটোরিকশার দৌরাত্ম্য আজ কেবল ট্রাফিকের সমস্যা নয়—এটি প্রশাসনিক জবাবদিহি, নাগরিক সচেতনতা এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ববোধের এক কঠিন পরীক্ষা।
যদি এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তবে এই বেপরোয়া চাকার নিচে পিষ্ট হবে কেবল সড়কের মানুষ নয়—বরং পুরো নগর সভ্যতা।
শহিদুল ইসলাম খোকন
১৫-১০-২০২৫ রাত ৮:৩৯
রাজধানী ঢাকা আজ যেন এক অনিয়ন্ত্রিত চাকার নগরী। সকাল থেকে গভীর রাত—রাস্তাজুড়ে ব্যাটারিচালিত অটো ও অটোরিকশার দৌড়ঝাঁপে নগরবাসীর জীবন হয়ে উঠেছে অতিষ্ঠ, অনিরাপদ ও দুর্বিষহ। একদিকে যানজট, অন্যদিকে প্রতিদিনের দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা—সব মিলিয়ে নগরের নাগরিক জীবন যেন রুদ্ধশ্বাস।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—এই বিশৃঙ্খলার দায় কার? কেন প্রশাসন নীরব? আর কেন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে এই অবৈধ যানবাহনের আধিপত্য?
প্রতিদিন প্রাণহানি, আহত অসংখ্য
চলতি মাসেই (অক্টোবর ২০২৫) রাজধানীতে অটো ও অটোরিকশার সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন, আহত হয়েছেন অগণিত। ট্রাফিক বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, রাজধানীর রাস্তায় প্রতিদিন প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক ব্যাটারিচালিত অটো ও ইজিবাইক চলছে—যার নেই কোনো বৈধ রেজিস্ট্রেশন বা অনুমোদন।
তবু এই অটোগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সড়ক ও মহাসড়কে—সিগন্যাল উপেক্ষা করে, উল্টোপথে ছুটে, মাঝরাস্তায় যাত্রী উঠানামা করছে।
মিরপুর, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, গাবতলী—যেখানেই যান, দৃশ্য এক: এক অনিয়ন্ত্রিত গতির শহর।
আইনরক্ষক ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা: ভয়ংকর নতুন প্রবণতা
সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো, অটোরিকশা চালকদের একাংশ এখন যেন আইনের ঊর্ধ্বে। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, ট্রাফিক সার্জেন্টরা অটো আটকাতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। এমনকি দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধুই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা নয়—বরং অটোরিকশা চালকদের নৈতিক অবক্ষয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক অধ্যাপক বলেন—যখন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও সংবাদকর্মীরা নিরাপদ থাকে না, তখন সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা তো কল্পনাই করা যায় না। এটি সামাজিক অরাজকতার প্রতিফলন।
অটোরিকশা সিন্ডিকেটের পেছনে কারা?
বহুদিন ধরেই অভিযোগ—অটোরিকশা ব্যবসার পেছনে রয়েছে একটি শক্তিশালী প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। চীন থেকে অটোরিকশার যন্ত্রাংশ আমদানি করে দেশের বিভিন্ন গ্যারেজে সংযোজন করে বিক্রি করা হচ্ছে—যার বড় অংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক ও অননুমোদিত।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উপসচিব (যানবাহন শাখা) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাছিম বলেন—আজ যত্রতত্র গড়ে ওঠা গ্যারেজ এবং চীন থেকে অবাধে আসা অটোরিকশার পার্টস নিয়ন্ত্রণ না করলে সমস্যার সমাধান হবে না। দেশের বড় বড় কয়েকটি গ্রুপসহ কিছু প্রতিষ্ঠান সরাসরি চীন থেকে পার্টস আমদানি করছে—এদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন—প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কারণে অনেক সময় উচ্ছেদ অভিযান ব্যর্থ হয়। কয়েকদিন পরই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। কিছু অসাধু ব্যক্তি তাদের পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করছেন না, যার ফলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সিটি কর্পোরেশনের নতুন উদ্যোগ: প্রশিক্ষণ ও নিবন্ধন
যদিও সমালোচনার মুখে, দুই সিটি কর্পোরেশন এখন অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
মো. নাছিম জানান—ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে আধুনিক অটোরিকশা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করেছে। ইতোমধ্যে ১৬ হাজার চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, পর্যায়ক্রমে ৮০ হাজার চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান—প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালকদের মাত্র ৫০ টাকায় লাইসেন্স প্রদান করা হচ্ছে, এবং শুধুমাত্র নিবন্ধিত সরকার অনুমোদিত আধুনিক অটোরিকশার জন্যই এই লাইসেন্স নিবন্ধন ব্যবস্থা প্রযোজ্য। অন্য কোনো অটোরিকশা, যদি সিটি কর্পোরেশন নিবন্ধনভুক্ত না হয়, সেটি রাস্তায় চলতে পারবে না।
আগামী ২৪ ও ২৫ অক্টোবর ২০২৫-এ নতুন প্রশিক্ষণ সেশন শুরু হবে, যেখানে ৩০০ মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণ দেবেন। তাদের মধ্যে ১০০ জন থাকবেন ট্রাফিক বিভাগ থেকে, বাকিরা অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে।
গ্যারেজ ও চার্জিং স্টেশন নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ:
মো. নাছিম বলেন—অটোরিকশা মালিক ও গ্যারেজ মালিকদের আমরা নির্দিষ্ট চার্জিং স্টেশন ও নিবন্ধন ব্যবস্থার আওতায় আনব। সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমোদন না থাকলে কোনো গ্যারেজ পরিচালনা করা যাবে না। তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে নীতিমালা সুপারিশ করবেন বলেও জানান।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নবিদ্ধ ঢাকা:
অটোরিকশা বিশৃঙ্খলা এখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচিত বিষয়। বিবিসি ও রয়টার্স-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানী ঢাকায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন বিস্তার নগরব্যবস্থাপনার অক্ষমতা প্রকাশ করছে।
বিশ্ব নগর পরিকল্পনাবিদদের একাংশের মতে—ঢাকার অটো-ইজিবাইক বিশৃঙ্খলা এখন নগর পরিকল্পনার ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে উঠছে।
সমাধানের প্রস্তাব: এখনই সময় ব্যবস্থা নেওয়ার
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আর বিলম্ব নয়। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে নগর বিপর্যয় অনিবার্য।
তাদের প্রস্তাবসমূহ হলো—
*জরুরি ভিত্তিতে অটোরিকশা নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা প্রণয়ন।
*সিটি কর্পোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশের যৌথ মাঠ পর্যবেক্ষণ।
*চালকদের বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ ও আচরণবিধি বাস্তবায়ন।
*অবৈধ গ্যারেজ ও চার্জিং স্টেশন শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ।
নাগরিক সচেতনতার আহ্বান:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উপসচিব (যানবাহন শাখা) মো. নাছিম নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন—
যাত্রীরা যেন নির্দিষ্ট স্থানে পার্ক করা অটোরিকশায় চড়েন এবং উল্টোপথে যেতে চালকদের বাধ্য না করেন। নাগরিক সচেতনতা ছাড়া কোনো আইনই সফল হবে না।
শেষ কথা:
অটো ও অটোরিকশার দৌরাত্ম্য আজ কেবল ট্রাফিকের সমস্যা নয়—এটি প্রশাসনিক জবাবদিহি, নাগরিক সচেতনতা এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ববোধের এক কঠিন পরীক্ষা।
যদি এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তবে এই বেপরোয়া চাকার নিচে পিষ্ট হবে কেবল সড়কের মানুষ নয়—বরং পুরো নগর সভ্যতা।