জুলাই আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন ৯৫ শতাংশ আ.লীগ সমর্থক: ড. খুরশিদ আলম

নিজস্ব প্রতিনিধি
১৫-১১-২০২৪ রাত ১২:৫১

জুলাই আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন ৯৫ শতাংশ আ.লীগ সমর্থক: ড. খুরশিদ আলম
জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন সফল হওয়ার পেছনে খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকদেরও ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল রিসার্চ (বিআইএসআর) ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. খুরশিদ আলম। তিনি ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নকারী ও নীতিমালা প্রস্তুতকারী ছিলেন।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধবিজ্ঞানী বলেন, ‘জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন সফল হওয়ার পেছনে খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকদেরও ভূমিকা রয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রায় ৯৫ শতাংশ সাধারণ সমর্থক এই আন্দোলনে সমর্থন দেন।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর লালমাটিয়ায় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্ভূক্তি এবং ন্যায়বিচার: জনপরিসরে গণতন্ত্র’ শীর্ষক সমসাময়িক বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল রিসার্চ (বিআইএসআর) ট্রাস্টের বিশেষ সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশিষ্ট তাত্ত্বিক ও উন্নয়ন মডেল প্রণেতা ড. খুরশিদ আলম আরও বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগ বিরোধীরা এই আন্দোলনকে সফল করেছে তা নয়, এটি সাধারণ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের অংশগ্রহণে গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। তাই বর্তমানে সাধারণ মানুষকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই।’
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার পরবর্তী তিন মাস ‘মবের মুল্লুক’ মনে হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন তাঁরা চেষ্টা করছেন সংস্কার করার। তাঁদের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে এখনই মন্তব্য করা ঠিক হবে না। সময় দিতে হবে।’
সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক লুৎফা আরও বলেন, ‘এটা বিপ্লবী সরকার না। ছাত্র-জনতা বিপ্লব করেনি, অভ্যুত্থান করেছে। তবে জনগণের আশা-আকাঙ্খার বাস্তবায়ন জরুরি। আওয়ামী লীগ সরকারের মতো আচরণ করা যাবে না। বর্তমানে একজন উপদেষ্টা আগের একজন আওয়ামী মন্ত্রীর মতো আচরণ করছেন। এক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে। সরকারের পরিষদের বেশিরভাগ এনজিও সম্পৃক্ত।’ এ ছাড়া এখনো আর্মড ফোর্সেস মেজর প্লেয়ার বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সেমিনারে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের অধ্যাপক ড. বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন সাধারণ আওয়ামী লীগের সমর্থকেরাও অনলাইনে বা মাঠে নেমে একাত্মতা পোষণ করেছেন। এই আন্দোলনে বাবা ও ছেলে দুজন দুই পক্ষে থাকতে দেখা গেছে। নীতির প্রশ্নে কতটা আপোষহীন থাকা যায়, তা দেখিয়েছে তরুণ সমাজ।’ তিনি সার্বিক ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘ঐক্য লাগবে কেন বলা হচ্ছে? কারণ এখন ঐক্য নাই। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
অধ্যাপক বখতিয়ারের মতে, বিগত সরকারের সময় ছাত্র ও শিক্ষকদের আন্দোলনকে সম্মান দেখানো বা সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নজির নেই। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত আমরা বিকল্প আদর্শ হিসেবে সামাজতান্ত্রিক ন্যায়প্রতিষ্ঠার আদর্শে উদ্বুদ্ধ ছিলাম। এখন আর কোনো বিকল্প আদর্শ নেই। বর্তমান সমাজ বিকল্পহীন কল্পনার সমাজে পরিণত হয়েছে।
ড. খুরশিদ আলম গত ৩৬ বছর ধরে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছেন, যেমন: বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, ইউনিসেফ, জিআইজেড, সিডা, ডেনিডা, ইউএসএইড, কেয়ার, বিআইডিএস ইত্যাদি। এসব প্রতিষ্ঠানে তাঁর কাজের ক্ষেত্রগুলো ছিল দারিদ্র্য বিমোচন, কমিউনিটি-ভিত্তিক গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মসূচি, লিঙ্গ অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি।
তিনি অর্থনৈতিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, সমাজবিজ্ঞান এবং অপরাধবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব এবং ধারণা উন্নয়নের চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য নতুন তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, সরকার ব্যবস্থার একটি নতুন শ্রেণিবিন্যাস ও গণতন্ত্রে জনগণের ক্ষমতা ইত্যাদি।
নিজস্ব প্রতিনিধি
১৫-১১-২০২৪ রাত ১২:৫১

জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন সফল হওয়ার পেছনে খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকদেরও ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল রিসার্চ (বিআইএসআর) ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. খুরশিদ আলম। তিনি ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নকারী ও নীতিমালা প্রস্তুতকারী ছিলেন।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধবিজ্ঞানী বলেন, ‘জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন সফল হওয়ার পেছনে খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকদেরও ভূমিকা রয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রায় ৯৫ শতাংশ সাধারণ সমর্থক এই আন্দোলনে সমর্থন দেন।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর লালমাটিয়ায় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্ভূক্তি এবং ন্যায়বিচার: জনপরিসরে গণতন্ত্র’ শীর্ষক সমসাময়িক বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল রিসার্চ (বিআইএসআর) ট্রাস্টের বিশেষ সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশিষ্ট তাত্ত্বিক ও উন্নয়ন মডেল প্রণেতা ড. খুরশিদ আলম আরও বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগ বিরোধীরা এই আন্দোলনকে সফল করেছে তা নয়, এটি সাধারণ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের অংশগ্রহণে গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। তাই বর্তমানে সাধারণ মানুষকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই।’
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার পরবর্তী তিন মাস ‘মবের মুল্লুক’ মনে হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন তাঁরা চেষ্টা করছেন সংস্কার করার। তাঁদের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে এখনই মন্তব্য করা ঠিক হবে না। সময় দিতে হবে।’
সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক লুৎফা আরও বলেন, ‘এটা বিপ্লবী সরকার না। ছাত্র-জনতা বিপ্লব করেনি, অভ্যুত্থান করেছে। তবে জনগণের আশা-আকাঙ্খার বাস্তবায়ন জরুরি। আওয়ামী লীগ সরকারের মতো আচরণ করা যাবে না। বর্তমানে একজন উপদেষ্টা আগের একজন আওয়ামী মন্ত্রীর মতো আচরণ করছেন। এক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে। সরকারের পরিষদের বেশিরভাগ এনজিও সম্পৃক্ত।’ এ ছাড়া এখনো আর্মড ফোর্সেস মেজর প্লেয়ার বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সেমিনারে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের অধ্যাপক ড. বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন সাধারণ আওয়ামী লীগের সমর্থকেরাও অনলাইনে বা মাঠে নেমে একাত্মতা পোষণ করেছেন। এই আন্দোলনে বাবা ও ছেলে দুজন দুই পক্ষে থাকতে দেখা গেছে। নীতির প্রশ্নে কতটা আপোষহীন থাকা যায়, তা দেখিয়েছে তরুণ সমাজ।’ তিনি সার্বিক ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘ঐক্য লাগবে কেন বলা হচ্ছে? কারণ এখন ঐক্য নাই। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
অধ্যাপক বখতিয়ারের মতে, বিগত সরকারের সময় ছাত্র ও শিক্ষকদের আন্দোলনকে সম্মান দেখানো বা সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নজির নেই। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত আমরা বিকল্প আদর্শ হিসেবে সামাজতান্ত্রিক ন্যায়প্রতিষ্ঠার আদর্শে উদ্বুদ্ধ ছিলাম। এখন আর কোনো বিকল্প আদর্শ নেই। বর্তমান সমাজ বিকল্পহীন কল্পনার সমাজে পরিণত হয়েছে।
ড. খুরশিদ আলম গত ৩৬ বছর ধরে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছেন, যেমন: বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, ইউনিসেফ, জিআইজেড, সিডা, ডেনিডা, ইউএসএইড, কেয়ার, বিআইডিএস ইত্যাদি। এসব প্রতিষ্ঠানে তাঁর কাজের ক্ষেত্রগুলো ছিল দারিদ্র্য বিমোচন, কমিউনিটি-ভিত্তিক গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মসূচি, লিঙ্গ অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি।
তিনি অর্থনৈতিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, সমাজবিজ্ঞান এবং অপরাধবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব এবং ধারণা উন্নয়নের চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য নতুন তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, সরকার ব্যবস্থার একটি নতুন শ্রেণিবিন্যাস ও গণতন্ত্রে জনগণের ক্ষমতা ইত্যাদি।