শিরোনামঃ
বাংলাদেশে ইএলএফ লুব্রিকেন্টস ও চেরি’র প্রিমিয়াম এসইউভি গাড়ির জাঁকজমক উন্মোচন  ডেমরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক হাবিবুর রহমানে মৃত্যুতে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল সানসেট কুয়াকাটা হোটেল এন্ড রিসোর্টে "বৈশাখী উৎসব" অনুষ্ঠিত হবে   ঢাকার বুকে যেন নেমে এসেছিল একখণ্ড ফিলিস্তিন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি বঞ্চিত অফিসাররা পদোন্নতির জন্য শাটডাউন কর্মসূচি ও ব্লকেড আন্দোলন নিয়ে মাঠে নামছে ময়লার ভাগাড়সহ কোন স্থানেই ময়লা পোড়ানো যাবে না। - পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান  ব্যাংককে মোদি-ড. ইউনুস বৈঠক: হাসিনার প্রত্যাবর্তন ও বিচারের ইঙ্গিত, আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন মোড়  গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নগর পরিকল্পনাবিদ কামরুল হাসান সোহাগ সম্মানিত নতুন নতুন রোমাঞ্চকর রাইডের সাথে ঈদ উদযাপন করুণ ফ্যান্টাসি কিংডম ও ফয়’স লেকে এস এস সি ২০০৪ ব্যাচের ইফতার অনুষ্ঠিত

  ঢাকার বুকে যেন নেমে এসেছিল একখণ্ড ফিলিস্তিন

#
news image

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ পরিণত হয় জনসমুদ্রে। লাখো মানুষের ঢলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পূর্ণ হয়ে যায় নির্ধারিত সময়ের বহু আগেই। আশপাশের সড়কজুড়ে মানুষে মানুষে ঠাসা। জায়গা না পেয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ আশ্রয় নেন রমনা পার্ক, ঢাবি ক্যাম্পাসসহ আশেপাশের এলাকা, যা পরিণত হয়েছে আরেকটি জনসমুদ্রে।
নিরীহ ফিলিস্তিনদের প্রতি সংহতি জানাতে বিশাল মানুষের সমাবেশের মধ্যে নারীদেরও অংশ গ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে  মনিকা নামের  উপস্থিত এক নারী জানান, মুসলিম হিসেবে আমরা ইসরায়েলের বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও  ফিলিস্তিনের নারী, শিশুসহ গাজাবাসীর প্রতি সমর্থন জানাতে এসেছি। এ যেন  ঢাকার বুকে যেন নেমে এসেছে একখণ্ড ফিলিস্তিন। 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকার রাস্তায় ঘোড়ায় চড়ে এক যুবকে ছুটতে দেখা যায়, হাতে তার ফিলিস্তিনের পতাকা। কিছুক্ষণ পর তাকে ঘিরে অনেকেই গলা ফাটিয়ে উচ্চারণ করে ‘তুমি কে, আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’। 
প্রচন্ড রোদে, ঘামে ভিজে মানুষের ঢল নামে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এ যেন একটি মুক্তিকামী ভূখণ্ডে পরিণত হয়েছে, যেখানে শ্বাস নিচ্ছে হাজারো প্রতিবাদী হৃদয়। তাদের হাতে পতপত করে উড়ছে লাল-সবুজ আর সাদা-কালো লাল রঙের পতাকা- বাংলাদেশ আর ফিলিস্তিনের, প্রতিরোধের আর মুক্তির প্রতীক।
‘মার্চ ফর গাজা’কর্মসূচিকে ঘিরে উপস্থিত জনতার চোখে মুখে ভেসে ওঠে নিপীড়িত মানুষের পক্ষে দাঁড়ানোর দৃপ্ত প্রতিজ্ঞা। এ আয়োজনটি ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে এবং গাজায় রক্তাক্ত শিশুদের, বিধ্বস্ত মায়েদের এবং ভেঙে পড়া শহরের জন্য একটি নিঃশব্দ বিশ্বে বজ্রনিনাদ তুলবার প্রয়াস।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে যখন বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে, তখন বাংলাদেশেও ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে আয়োজিত হলো ‘মার্চ ফর গাজা’ নামক একটি ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচি।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ- মানবাধিকারকর্মী, ছাত্র সংগঠনের সদস্য, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এবং সচেতন সাধারণ নাগরিক। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড- ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’, ‘গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব’, ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’। এসব শব্দ শুধু প্রতিবাদের ভাষা নয়। এগুলো ছিল একটি নির্যাতিত জাতির আত্মচিৎকার, যা ঢাকায় প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
 সেখানে অনেকের কাঁধে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা, কেউবা শরীরে জড়িয়ে নিয়েছেন সেই রঙের শাল বা গামছা। একের পর এক মিছিল আসছে উদ্যানে- একেকটি যেন একেকটি আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ। বিভিন্ন সংগঠন ব্যানার হাতে হাঁটছে একযোগে, কণ্ঠে স্লোগান- ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘গাজা উই আর উইথ ইউ’। এসব কণ্ঠে ছিল রাগ, কান্না আর ভালোবাসার এক মিশ্র প্রতিধ্বনি। সবার মুখে গণহত্যা বন্ধ এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা। অনেকের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো; গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব’ এমন লেখা দেখা গেছে।
এই জমায়েত নিছক কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয় এটি হলো মানবতার স্বার্থে একটি মৌলিক অবস্থান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক সাহসী উচ্চারণ। বিশ্ব যেখানে নীরব, সেখানে ঢাকা কথা বলেছে। গাজার শিশুরা হয়তো শুনতে পায়নি। কিন্তু ইতিহাস ঠিকই লিখে নেবে- একসময়, এক দেশ, এক শহর প্রতিবাদ করেছিল।
এই ‘মার্চ ফর গাজা’ শুধু একদিনের কর্মসূচি নয়, বরং হয়ে উঠেছে একটি নৈতিক দায়বদ্ধতার প্রকাশ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গতকাল শুধু এক উদ্যানই ছিল না, তা হয়ে উঠেছিল গাজা উপত্যকার এক প্রতীকী ছায়া, যেখানে প্রতিটি পদচারণা ছিল প্রতিরোধের অংশ, প্রতিটি উচ্চারণ ছিল একজোড়া নিপীড়িত চোখের কান্না মুছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি। 
গাজা যেন ঢাকা থেকে বেশি দূরে নয়। অন্তত গতকালের দিনটায়, হাজারো স্লোগানের ভিড়ে, ঢাকার বুকে বিশ্ববাসি দেখেছে একখণ্ড ফিলিস্তিন।
একখণ্ড ফিলিস্তিন

এস এম নাসিম

১৩-৪-২০২৫ দুপুর ১১:৫০

news image

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ পরিণত হয় জনসমুদ্রে। লাখো মানুষের ঢলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পূর্ণ হয়ে যায় নির্ধারিত সময়ের বহু আগেই। আশপাশের সড়কজুড়ে মানুষে মানুষে ঠাসা। জায়গা না পেয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ আশ্রয় নেন রমনা পার্ক, ঢাবি ক্যাম্পাসসহ আশেপাশের এলাকা, যা পরিণত হয়েছে আরেকটি জনসমুদ্রে।
নিরীহ ফিলিস্তিনদের প্রতি সংহতি জানাতে বিশাল মানুষের সমাবেশের মধ্যে নারীদেরও অংশ গ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে  মনিকা নামের  উপস্থিত এক নারী জানান, মুসলিম হিসেবে আমরা ইসরায়েলের বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও  ফিলিস্তিনের নারী, শিশুসহ গাজাবাসীর প্রতি সমর্থন জানাতে এসেছি। এ যেন  ঢাকার বুকে যেন নেমে এসেছে একখণ্ড ফিলিস্তিন। 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকার রাস্তায় ঘোড়ায় চড়ে এক যুবকে ছুটতে দেখা যায়, হাতে তার ফিলিস্তিনের পতাকা। কিছুক্ষণ পর তাকে ঘিরে অনেকেই গলা ফাটিয়ে উচ্চারণ করে ‘তুমি কে, আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’। 
প্রচন্ড রোদে, ঘামে ভিজে মানুষের ঢল নামে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এ যেন একটি মুক্তিকামী ভূখণ্ডে পরিণত হয়েছে, যেখানে শ্বাস নিচ্ছে হাজারো প্রতিবাদী হৃদয়। তাদের হাতে পতপত করে উড়ছে লাল-সবুজ আর সাদা-কালো লাল রঙের পতাকা- বাংলাদেশ আর ফিলিস্তিনের, প্রতিরোধের আর মুক্তির প্রতীক।
‘মার্চ ফর গাজা’কর্মসূচিকে ঘিরে উপস্থিত জনতার চোখে মুখে ভেসে ওঠে নিপীড়িত মানুষের পক্ষে দাঁড়ানোর দৃপ্ত প্রতিজ্ঞা। এ আয়োজনটি ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে এবং গাজায় রক্তাক্ত শিশুদের, বিধ্বস্ত মায়েদের এবং ভেঙে পড়া শহরের জন্য একটি নিঃশব্দ বিশ্বে বজ্রনিনাদ তুলবার প্রয়াস।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে যখন বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে, তখন বাংলাদেশেও ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে আয়োজিত হলো ‘মার্চ ফর গাজা’ নামক একটি ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচি।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ- মানবাধিকারকর্মী, ছাত্র সংগঠনের সদস্য, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এবং সচেতন সাধারণ নাগরিক। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড- ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’, ‘গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব’, ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’। এসব শব্দ শুধু প্রতিবাদের ভাষা নয়। এগুলো ছিল একটি নির্যাতিত জাতির আত্মচিৎকার, যা ঢাকায় প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
 সেখানে অনেকের কাঁধে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা, কেউবা শরীরে জড়িয়ে নিয়েছেন সেই রঙের শাল বা গামছা। একের পর এক মিছিল আসছে উদ্যানে- একেকটি যেন একেকটি আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ। বিভিন্ন সংগঠন ব্যানার হাতে হাঁটছে একযোগে, কণ্ঠে স্লোগান- ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘গাজা উই আর উইথ ইউ’। এসব কণ্ঠে ছিল রাগ, কান্না আর ভালোবাসার এক মিশ্র প্রতিধ্বনি। সবার মুখে গণহত্যা বন্ধ এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা। অনেকের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো; গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব’ এমন লেখা দেখা গেছে।
এই জমায়েত নিছক কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয় এটি হলো মানবতার স্বার্থে একটি মৌলিক অবস্থান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক সাহসী উচ্চারণ। বিশ্ব যেখানে নীরব, সেখানে ঢাকা কথা বলেছে। গাজার শিশুরা হয়তো শুনতে পায়নি। কিন্তু ইতিহাস ঠিকই লিখে নেবে- একসময়, এক দেশ, এক শহর প্রতিবাদ করেছিল।
এই ‘মার্চ ফর গাজা’ শুধু একদিনের কর্মসূচি নয়, বরং হয়ে উঠেছে একটি নৈতিক দায়বদ্ধতার প্রকাশ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গতকাল শুধু এক উদ্যানই ছিল না, তা হয়ে উঠেছিল গাজা উপত্যকার এক প্রতীকী ছায়া, যেখানে প্রতিটি পদচারণা ছিল প্রতিরোধের অংশ, প্রতিটি উচ্চারণ ছিল একজোড়া নিপীড়িত চোখের কান্না মুছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি। 
গাজা যেন ঢাকা থেকে বেশি দূরে নয়। অন্তত গতকালের দিনটায়, হাজারো স্লোগানের ভিড়ে, ঢাকার বুকে বিশ্ববাসি দেখেছে একখণ্ড ফিলিস্তিন।
একখণ্ড ফিলিস্তিন